
পৃথিবীর যে দশটি স্থানে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ!
অজানা সম্পর্কে জানতে মানুষ কৌতূহলী থাকে সবসময়। পৃথিবীতে অনেক স্থান রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে মানুষের কিছুটা হলেও জানাশোনা রয়েছে, আবার এমন কিছু স্থান রয়েছে যেগুলো সম্পর্কে মানুষের জানাশোনা খুবই নগণ্য বা একদমই অজানা। আজকের আয়োজনে জানবো এমন কিছু স্থান সম্পর্কে, যেখানে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ! চলুন জেনে আসা যাক-
ভ্যাটিকান সিক্রেট আর্কাইভস, ভ্যাটিকান সিটি
Source: Internet
ভ্যাটিকান সিটির কেন্দ্রীয় সংগ্রহশালা ভ্যাটিকান সিক্রেট আর্কাইভসে রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র, দলিল দস্তাবেজ, পেপাল অ্যাকাউন্টের বই ইত্যাদি অনেক কিছু কয়েক শতাব্দী ধরে সংগৃহীত আছে। এখানে প্রবেশ করা সহজ কোন বিষয় নয়, অনুমতি সাপেক্ষে গবেষণার নিমিত্তে গবেষকদের তিন মাসের জন্য প্রবেশের অনুমতি প্রদান করা হয় এবং একবারে ৬০ জনের বেশি গবেষককে এখানে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয় না।
লাস্কুয়েক্স গুহা, ফ্রান্স
লাস্কুয়েক্স গুহা, ফ্রান্স
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, দর্শনীয় স্থান রূপান্তরিত হওয়া লাস্কুয়েক্স গুহায় ১৯৪০ সালে প্রাগৈতিহাসিক চিত্র পাওয়া যায়। দর্শনার্থীদের প্রবেশের ফলে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইডের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এই গুহা। ফলে, ১৯৬৩ সাল থেকে সাধারণ পর্যটকদের এখানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সাভালবার্ড বীজ ভোল্ট
Source: Internet
প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় পরিকল্পিতভাবে তৈরি নরওয়ের উত্তর মেরুতে ৩২০ ফুটের বেশি নিমজ্জিত একটি স্থান সাভালবার্ড বীজ ভোল্ট। যেখানে অনেক বীজ সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে। বছরে একবার এই বীজ ভোল্ট খোলা হয়।
ফোর্ট নক্স, কেনটাকি
Source: Internet
স্বর্ণের সংগ্রহশালা কিংবা ভাণ্ডার আছে এমন ব্যক্তিরাই সবচেয়ে নিরাপদ স্থান বলে পরিচিত ফোর্ট নক্স ভোল্টে বাস করেন। একক কোন দর্শনার্থী বা ব্যক্তি এখানে প্রবেশ করতে চাইলে সেখানে অবস্থানরত কোনো কর্মীর সাথে থাকা বাধ্যতামূলক।
উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপ, ভারত
Source: Internet
বঙ্গোপসাগরে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের উপজাতিরা ৬০ হাজার বছর ধরে এখানে বাস করছেন বলে ধারণা করা হয়। বাইরের সম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ করতে না চাওয়া এই আদিবাসীরা ২০০৬ সালে উত্তর সেন্টিনেল দ্বীপের গভীরে ঢুকে দুই জেলেকে হত্যা করে। এছাড়াও, তারা সেখানে হেলিকপ্টার দেখলেও তার দিকে তীর নিক্ষেপ করে।
এরিয়া ৫১, নেভাডা
Source: Internet
২৬ হাজার বর্গ কিঃমিঃ এই সামরিক বাহিনীর অপারেশন ঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের। তবে, ১৯৯২ সালের দস্তাবেজ ২০১৩ সালে নেভাডা সামরিক বেসের কথা উল্লেখ করে প্রকাশিত না হওয়া অবধি যুক্তরাষ্ট্র এটি তাদের বলে স্বীকার করেনি। কঠোর নিরাপত্তা সমৃদ্ধ এই স্থানে এলিয়েন সংক্রান্ত কার্যকলাপ সম্পাদিত হয় বলে ধারণা করেন সমালোচকরা।
চেরনোবিল, ইউক্রেন
Source: Internet
তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন অংশ ইউক্রেনের চেরনোবিলের কাছাকাছি ১৯৮৬ সালের ২৬শে এপ্রিল ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যার রেডিয়েশনের ফলে ৯ হাজার থেকে ১ মিলিয়ন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এই ভয়াবহ দুর্যোগের ৩০ বছর পেরিয়ে গেলেও, পরিচ্ছন্নতা প্রকল্প অব্যাহত রয়েছে। ধারণা করা হয়, আরো অন্তত ২০ বছর পরও এটি বাসযোগ্য হওয়া সম্ভব নয়।
সম্রাট কিন শি হুয়াং এর সমাধি, চীন
Source: Internet
১৯৭৪ সালে কৃষকরা চীনের প্রথম সম্রাট কিন শি হুয়াং এর সমাধি আবিষ্কার করেন। সেখানে প্রায় ২ হাজার মাটির নির্মিত সৈন্য এবং আরো ৮ হাজার সৈন্য অনাবৃত রয়েছে। আধুনিক প্রযুক্তি দ্বারা খনন কার্য চালানো হলে পুরাতন নিদর্শন ক্ষতিগ্রস্থ হবে এই চিন্তা থেকে চীন সরকার সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা, এমনকি প্রত্নতাত্ত্বিকদের সম্রাট কিন শি হুয়াং এর সমাধি স্পর্শ করা ও প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে।
ইউ এন বাফার জোন, সাইপ্রাস
Source: Internet
১৯৭৪ সালে তুর্কি সেনারা সাইপ্রাস আক্রমণ করার পর গ্রীক ও তুর্কিদের মধ্যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। এই গৃহযুদ্ধের সমাপ্তির পর, জাতিসংঘ দেশটির রাজধানী নিকোশিয়ার “বাফার জোন” নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে। যেখানে একটি দেয়ালের দ্বারা উত্তর তুরস্ক সম্প্রদায় থেকে দক্ষিণের গ্রীক সম্প্রদায়কে পৃথক করা হয়েছে। পরিত্যক্ত ঘর বাড়ি এবং ব্যবসায়কেন্দ্র রয়েছে দেয়ালের পেছনে। এখানকার কিছু স্থানে সাধারণ মানুষ যাওয়া নিষিদ্ধ করা না হলেও, কয়েক দশক ধরে অন্য সকল স্থানে কেউ যেতে পারে না। ইউ এন বাফার জোনের সেসব স্থানে প্রবেশ নিষিদ্ধ।
স্নেক আইল্যান্ড, ব্রাজিল
Source: Internet
বিশ্বের সবচেয়ে সাংঘাতিক প্রাণনাশক সাপের একটি দ্বীপ ব্রাজিলের ইহহা দ্য কুইমেদা গ্রান্ডে-ডাবেড স্নেক আইল্যান্ড। কামড়ে চারপাশে মানুষের মাংস গলে যায় এমন বিষাক্ত সুবর্ণ ল্যান্সহেড ভাইপার সাপ আছে এখানে। নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে ব্রাজিল সরকার এখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। গবেষকদের যাওয়ার অনুমতি প্রদান করা হলেও, তাদের সাথে অবশ্যই ডাক্তার থাকতে হবে।
আপনার মূল্যবান মতামত কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ...